July 11, 2012

Sandals thrown at the Judge of Dinajpur Courthouse

 দিনাজপুরে আদালতে বিচারকের উদ্দেশে স্যান্ডেল


দিনাজপুরে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্র্রেট আদালতে বিচারকের উদ্দেশে স্যান্ডেল নিক্ষেপ করেছে আসামি। ঘটনাটি ঘটেছে, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টায় দিনাজপুরের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত চলাকালে। এ সময় দিনাজপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট একরামুল আমীনসহ কয়েকজন আইনজীবী, কয়েকটি মামলার বাদী ও বিবাদীরা উপস্থিত ছিলেন।  আদালত চলাকালে জিআর ১৪৭ মামলার মোটরসাইকেল চুরি মামলার আসামি দুলাল (২৬) বিচারকের উদ্দেশ্যে এই কাজটি করে। প্রথম স্যান্ডেলটি গিয়ে কোর্ট জিআর পুলিশ ইন্সপেক্টরের গায়ে লাগে। এতে হতবিহবল হয়ে পড়ে সবাই। পরক্ষণেই কোমরে লুকিয়ে রাখা আরেকটি স্যান্ডেল বের করে ছুড়ে মারলে চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নাজির হোসেন মাথা সরিয়ে নেন। ফলে এটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। এ ঘটনায় মুহূর্তের মধ্যে হৈচৈ পড়ে যায় আদালত পাড়ায়। পরে এ ব্যাপারে আসামি দুলালকে আদালতে উপস্থিত কয়েকজন আইনজীবী এর কারণ জিজ্ঞাসা করলে সে বলে,  এই বিচার, বিচারক নয়, উনি কাগজ কুড়ানো বিচারক! প্রকৃত দোষীদের বিচার না করে নিরীহ মানুষদের জেলখানায় বন্দি করে রেখেছে। তাদের জামিন দিচ্ছে না। দিনাজপুর আইনজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট একরামুল আমীন ঘটনাটিকে অত্যন্ত দুঃখজনক বলে জানান। তিনি বলেন, ওই আসামি আসলে খুব খারাপ ব্যক্তি। জঘন্য মানুষ! সে খুব খারাপ কাজ করেছে।

Courtesy: http://www.mzamin.com/details.php?nid=MTI5Mjk=&ty=MA==&s=Mjc=&c=MQ==

July 10, 2012

Corrupted relief distributor consumed 160 million taka of rice in one district only

 টিআর-কাবিখা: এক জেলাতেই সাবাড় সাড়ে ১৬ কোটি টাকা

প্রকল্প থেকে অনেক দূরে চাল-গম। উপজেলা সদরেই সব শেষ। চাল ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস, খাদ্য অফিস, আড়ালে থাকা উপজেলার বড় কর্মকর্তা, কোথাও কোথাও জনপ্রতিনিধিদের ভাগ। সব মিলিয়ে সাবাড় হয়ে যাচ্ছে বরাদ্দের তিন ভাগের দু’ভাগ। বাকি এক ভাগও প্রকল্প বা কাজের গোড়া পর্যন্ত পৌঁছায় না। টেস্ট রিলিফ (টিআর)-এর ১ টন চালের সরকারি মূল্য ৩৪ হাজার ১৯৫ টাকা। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় অনুসন্ধানে দেখা গেছে, প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া এই চালের মূল্য দেয়া হয়েছে সর্বোচ্চ ১৫ হাজার টাকা। সবচেয়ে কম মূল্য দেয়ার রেকর্ড হয়েছে সদর উপজেলায়। এখানে চালের মূল্য দেয়া হয়েছে ১৩ হাজার টাকা। অর্ধেকের কমে চাল বিক্রি হলেও কাগজপত্রের হিসাব আবার পাক্কা। নানাভাবে ৩৪ হাজার ১৯৫ টাকার হিসাবই মেলানো হচ্ছে। জেলার কয়েকটি উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, চালের এই দর সাব্যস্ত করে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট। তাদের মূল্যের বাইরে চাল বিক্রি করা কঠিন। উপজেলা খাদ্য অফিস, খাদ্য গুদাম কর্মকর্তাদের সঙ্গেও আছে তাদের যোগসাজশ। অভিযোগ আছে প্রকল্প কমিটির লোকজন সরাসরি বরাদ্দ আনতে গেলে তাদের শিকার হতে হয় নানা হেনস্তার। ধরিয়ে দেয়া হয় গুদামে রাখা পচা চাল। আর ব্যবসায়ীদের দেয়া হয় ভাল চাল। এই চাল বিক্রি করে তারা সরকার নির্ধারিত দামের কাছাকাছি টাকা ঠিকই বুঝে নেয়। কিন্তু প্রকল্পধারীদের মিলে অর্ধেকেরও কম টাকা। এই টাকায় শেষমেশ কাজ আর হয় না। একই অবস্থা কাবিখা’র গমের। ২৫ হাজার টাকার গম ১৪-১৫ হাজার টাকা। সরজমিন অনুসন্ধানে দেখা গেছে, নানা কারসাজিতে ব্যবসায়ীদের সিন্ডিকেট হাতিয়ে নিচ্ছে কোটি কোটি টাকা। পকেট ভরছে পিআইও, ইউএনও, কোথাও কোথাও দুর্নীতিবাজ জনপ্রতিনিধিদের। অবশ্য জনপ্রতিনিধিরা আড়ালে থেকে তাদের মনোনীতদের মাধ্যমে বুঝে নেন টাকার হিস্যা। সব মিলিয়ে হরিলুটে প্রকল্প হয়ে ওঠে খোলা মাঠ। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ২০১১-১২ অর্থবছরে টিআরের মোট বরাদ্দ এসেছে ৫৯৬৬ টন। ৩৮৩৩টি প্রকল্পের বিপরীতে দেয়া হয় এই বরাদ্দ। এরমধ্যে বিশেষ ও সাধারণ ক্যাটিগরি রয়েছে। বরাদ্দকৃত এসব চালের আর্থিক মূল্য প্রতিটন ৩৪ হাজার ১৯৫ টাকা হিসেবে ২০ কোটি ৪০ লাখ ৭ হাজার ৩৭০ টাকা। কিন্তু প্রকল্পধারীরা ১ টনের মূল্য পেয়েছে ১৫ হাজার টাকা। সে হিসেবে ৫৯৬৬ টন চালের দাম আসে ৮ কোটি ৯৪ লাখ ৯০ হাজার টাকা। বাকি ১১ কোটি ৪৫ লাখ ১৭ হাজার ৩৭০ টাকা গায়েব। এর কোন হিসেব নেই। কাবিখার ৮৩১টি প্রকল্পের বিপরীতে বরাদ্দ দেয়া হয় ৬০৫৪ টন গম। এই বরাদ্দও আসে দুই ক্যাটিগরিতে। সরকারি দর ২৫ হাজার টাকা হিসাবে এর মূল্য আসে ১৫ কোটি ১৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা। বলা হচ্ছে, গমের মূল্য দেয়া হয়েছে ১৫ হাজার টাকা করে। সে হিসেবে এই গম বিক্রি হয়েছে ৯ কোটি ৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। এখানেও গায়েব প্রায় ৬ কোটি ৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা। টিআর-কাবিখা থেকে সব মিলিয়ে সিন্ডিকেটের ধান্দা হয়েছে ১৬ কোটি ৫০ লাখ ৬৮ হাজার টাকা।
কে নির্ধারণ করলো এই দাম: সদর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস। সেখানেই দেখা হয় বাসুদেব ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সদস্য জাহাঙ্গীর আলমের সঙ্গে। জানান, চান্দি নদীরপাড় গোরস্থানের জন্য ২ টন চাল বরাদ্দ পেয়েছিলেন। বিক্রি করেছেন ১৫ হাজার টাকা করে ৩০ হাজার টাকা। জাহাঙ্গীর বলেন, প্রতিবাদ করেছিলেন এত কম দাম দেয়ায়। কিন্তু লাভ হয়নি। মনোনীত চাল ব্যবসায়ী বলে দেন, অন্য জায়গায় গিয়ে বিক্রি করেন। অফিস সহকারী সেলিম মিয়া বলেন, এটা একটা রহস্য। চাল-গমের দামডা কারা ঠিক করে সেইটা আগে খুইজ্জা বাইর করেন। সেলিম বলেন, আমরার কথা অইল জাগাত মাল নিবা কাজ করবা। এখানেই জানা গেল, বরাদ্দের ডিও দেয়ার ১৫ দিন আগেও কেউ কেউ (প্রকল্পধারী) টাকা নিয়ে যান চাল-গম ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। নাসিরনগর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. হোসেনও অনুরোধ জানান, আসল রহস্য খুঁজে বের করার। বলেন, ভাই চাল নিয়ে আর পারি না। চাল বিক্রি হয় সাড়ে ১৪ হাজার থেকে ১৫ হাজার টাকা। কিন্তু আমাদের তো সরকারি রেট বিভিন্ন ভাউচার দিয়ে সমন্বয় করতে হয়। দাম কম পাওয়ায় প্রকল্প চেয়ারম্যানরা ক্ষতিগ্রস্ত হন। স্থানীয় ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্যের একটি ঘটনাও জানান এই কর্মকর্তা। বলেন, ৭-৮ মাস আগের ঘটনা। স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করার জন্য ১২ টন চাল বরাদ্দ দেন এমপি স্যার। ভাল দামে যাতে চাল বিক্রি করতে পারেন সেজন্য আমি প্রকল্পের সভাপতি উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডারকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া পাঠাই। তিনি সেখানে নাসিরনগরের চেয়ে ২ হাজার টাকা বেশিতে বিক্রির ব্যবস্থা করেন। কিন্তু ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ব্যবসায়ী এই ডিও নিয়ে নাসিরনগর এলে তাকে গুদাম থেকে চাল তুলতে দেয়া হয়নি। পরে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের কাছেই টন প্রতি ২ হাজার টাকা করে কমে বিক্রি করতে হয়। সূত্র জানায়, এখানে চাল-ধান ক্রয়ের ব্যবসা করেন উপজেলা আওয়ামী লীগ সেক্রেটারি মনিরের ছোট ভাই ও যুবলীগ নেতা অঞ্জনসহ ৮-১০ জন। নবীনগরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম, সরাইল, সদর ও বিজয়নগর উপজেলার একই সঙ্গে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা মো. মিজানুর রহমান, কসবা ও আশুগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার দায়িত্বে থাকা সৈয়দ আরিফুল হক, আখাউড়া উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম, বাঞ্ছারামপুরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিদুল আলম জানান, দাম কে ঠিক করে তা তাদের জানা নেই। নবীনগরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. মাহবুব আলম বলেন, বাজারের দামের সঙ্গে সরকারের দামের পার্থক্য আছে ঠিক। কিন্তু এতে আমাদের কি করার আছে। আমাদের তো ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কোন কানেকশন নেই। আখাউড়ার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. তাজুল ইসলাম বলেন, যারা বিক্রি করবে আর যারা কিনবে দর-দামের বিষয়টি তাদের ব্যাপার। এ ব্যাপারে তারা স্বাধীন। বাঞ্ছারামপুরের প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মফিদুল আলম বলেন, পাবলিক কি করে তা তো আমার দেখার বিষয় না। তাদেরকে বলে দেই নিজ উদ্যোগে যাতে উঠিয়ে নেন।
সব ব্যবসায়ীর এক রা: চালের মান ভাল না। মোটা। পচা। গরুকে খাওয়ানোর যোগ্যও না। এই এক আওয়াজ ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়ার একেক উপজেলায় দাম একেক রকম। স্থানীয় সিন্ডিকেটই মনগড়া মতো এই দাম নির্ধারণ করে। সূত্র জানিয়েছে, শুধু তাই নয় তারা যার কাছ থেকে যত দিয়ে পারে তত দিয়েই চাল কিনে নেয়। সরকারি রেটের ধারও ধারছে না এরা। সরকারি রেটে চাল প্রতি টন ৩৪ হাজার ১৯৫ টাকা। আর গম ২৫ হাজার ১২ টাকা। খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব (সরবরাহ) মোহাম্মদ আবদুস সোবহান স্বাক্ষরিত এক পত্রে চাল ও গমের অর্থনৈতিক মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি জানানো হয়। এই চিঠি আছে সব প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার ফাইলে। অনেক প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা নিজেও এই রেট জানেন না। এখানকার ৯ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার মধ্যে ২-১ জন ছাড়া কেউ সরকারি রেট ঠিক করে বলতে পারেননি। আর প্রকল্প মালিকরা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিস থেকে ডিও নিয়ে সোজা যান ব্যবসায়ীদের কাছে। ডানে-বায়ে খোঁজও নেন না। সরকারি মূল্য জানা তো দূরে থাক। তাদের জানা আছে ব্যবসায়ীদের নির্ধারণ করা রেট। এ হিসাব মতেই টাকা গুনে নিয়ে যান। প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা জানান, নিয়ম হচ্ছে প্রকল্প কমিটির সভাপতি বা চেয়ারম্যান ডিও নিয়ে যাবেন প্রথমে খাদ্য অফিসে। এরপর খাদ্য গুদামে। সেখান থেকে মাল উত্তোলন করে কাজ করবেন। এটাই নিয়ম। কোন কোন উপজেলায় বরাদ্দপ্রাপ্তরা খাদ্য অফিস বা গুদাম পর্যন্ত গেলেও ডিওটি সেখানে জমা করে বলে আসেন তিনি কার কাছে চাল বিক্রি করেছেন। গুদামে তা নোট রাখা হয়। পরে ওই ব্যবসায়ী চাল উঠিয়ে নেন। ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়েই কথা বলি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিভিন্ন উপজেলার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে। নাসিরনগরের ইসলাম ট্রেডার্স এর মালিক হান্নান জানান, তাদের এখানে শুরুতে চালের দাম ছিল ২১ হাজার টাকা। আস্তে আস্তে তা নেমে আসে সাড়ে ১৪ হাজার টাকায়। বাঞ্ছারামপুরের উজানচরের তাজুল ইসলাম চাল কিনেছেন ১৫ হাজার টাকায়। কিন্তু এ থেকে আবার এক-দেড় হাজার টাকা অফিস খরচ কেটে রেখে প্রকল্পধারী (ব্যবসায়ীদের ভাষায় পার্টি)কে দেয়া হয় ১৩ থেকে সাড়ে ১৩ হাজার টাকা। অগ্রিম কিনলে দাম আরও কম দেয়া হয় বলে জানান এই ব্যবসায়ী। তাজুল ইসলাম কিনেছেন ১৯ টন চাল। তাজুল ছাড়াও এই উপজেলায় চাল কিনেছেন বাঁশবাড়ি গ্রামের আলী আহমদ, আসাদনগরের রশিদ, দুর্গারামপুরের অদুদ, উজানচরের সঞ্জিত, বুধাইরকান্দির নূরুল ইসলাম, বাঞ্ছারামপুর সদরের হাসু। তবে সবচেয়ে বেশি চাল কিনেছেন আলী আহমদ। মোট বরাদ্দের অর্ধেকই কিনেছেন তিনি। উজানচরের সঞ্জিত জানান, চালের চাহিদা কম। ১৪-১৫ হাজার টাকা টন কিনেছেন তিনি। সব খরচ বাদ দিয়ে টন প্রতি তার লাভ হয়েছে ৫শ’ টাকা করে। বলেন কিনছি কমে, বেচছিও কমে। আখাউড়ার ব্যবসায়ী আফু মিয়া জানান, প্রথম দিকে তাদের এখানে দর ছিল ১৫ হাজার টাকা। পরে তা নেমে আসে ১৪ থেকে সাড়ে ১৪ হাজার টাকায়। নবীনগরের ব্যবসায়ী সুবল সাহা। তার সঙ্গে আছেন আলমগীর ও হাফেজ নামের আরও দু’জন। তিন জনের সিন্ডিকেট। এছাড়াও এখানে চাল কিনেছেন জসিম উদ্দিন আহমদ ও লিয়াকত আলী। সুবল সাহা জানান, প্রথমে তাদের এখানে রেট ছিল ১৬ হাজার টাকা। এরপর তা নেমে আসে ১৫ হাজারে। সর্বশেষ সাড়ে ১৪ হাজারে। বলেন, রেট একেকবার একেক রকম হয়। লিয়াকত বলেন, সরকারি রেট তো ঠিকই আছে। বাজারের দর দেহেন না। কসবার আইয়ুব জানান, তাদের এখানে চালের দাম ছিল ১৬ হাজার। তবে পার্টিরে দেয়া অইছে ১৫ হাজার। সরাইলের চাল ব্যবসায়ী মরম মিয়া জানান, ১৫ হাজার টাকা দরে চাল কিনেছেন তারা। এ থেকে আবার খরচও আছে। বলেন, ব্যবসায়ী ৪ জন। মিল নাই। তার আক্ষেপ মিল থাকলে আরও সুবিধে করতে পারতেন। তবে সবচেয়ে কম দর দেয়া হয়েছে সদরে। মাত্র ১৩ হাজার টাকায় ১ টন চাল বিক্রি করতে হয়েছে প্রকল্প মালিকদের। এখানকার ব্যবসায়ী আলী মিয়া বলেন, এবার চালের মান খারাপ ছিল। গত বছরের পুরাতন চাল সাপ্লাই দেয়া অইছে। সারা দেশের মানুষই জানে চাল খারাপের খবর। তবে জেলা খাদ্য কর্মকর্তা মো. শাহজাহান ভূঁইয়া নিম্নমানের চাল সরবরাহের অভিযোগ অস্বীকার করেন। বলেন, আমার গোডাউনে কোন নিম্নমানের চাল নেই। যদি কেউ এরকম বলে তাকে বলেন চালের নমুনা দিতে। আমি তা পরীক্ষার জন্য ল্যারেটরিতে পাঠাবো। বরাদ্দ প্রাপ্তরা সরাসরি গোডাউনে গেলে নিম্নমানের চাল সরবরাহের অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি। বলেন, আপনি নিজে গিয়ে দেখেন।
যেভাবে ভাগ-বাটোয়ারা: চালের দাম-মান যাই হোক ঘাটে ঘাটে টাকা দেয়ার কোন হেরফের নেই। বাঞ্ছারামপুরের এক ব্যবসায়ী জানান, পিআইও অফিসে খরচ দিতে হয়েছে তাদের এক হাজার টাকা। মাস্টার রোল ২শ’ টাকা, খাদ্য অফিস ২শ’ টাকা, গোডাউন খরচ ৭শ’ টাকা, লেবার ১৬০ টাকা। আখাউড়ার এক ব্যবসায়ী জানান, পিআইও অফিসে দেড় হাজার টাকা খরচ দিতে হয়েছে। একেক উপজেলায় এই খরচও একেক রকম। ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদরে পিআইও অফিসে সব মিলিয়ে খরচ দিতে হয় ২০০০ টাকা। নবীনগরে ১৭শ’ থেকে ২০০০ টাকা। ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী জানান, এর বাইরে খাদ্য গুদামে ৪শ’ টাকা, খাদ্য কর্মকর্তা ১শ’ টাকা, খাদ্য অফিসের কর্মচারীদের টন প্রতি ৫০ টাকা করে খরচ দিতে হয়। কসবার ব্যবসায়ী আইয়ুব জানান, তাদের পিআইও অফিসে দিতে হয়েছে ১ হাজার টাকা। সরাইলের মরম মিয়া জানান, তাদের দিতে হয়েছে বিক্রয় মূল্যের শতকরা ১৫ ভাগ। এই টাকা যায় কোথায়? পিআইও অফিসে যে টাকা রাখা হয় বা চাল ব্যবসায়ীরা প্রকল্প মালিকদের বিভিন্ন খরচের কথা বলে কমিয়ে যে টাকা দেন সেই টাকার মালিক কি শুধু তারা একাই হোন। নাকি এলাকার সংসদ সদস্য, উপজেলা চেয়ারম্যানও পান সেই ভাগ। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন বিশেষ বরাদ্দটি হয় সংসদ সদস্যদের। আর সাধারণ বরাদ্দ আসে উপজেলার অনুকূলে। সরাইলের মরম মিয়া বলেন, পিআইও অফিস আমাদের কাছ থেকেও নেয়, আবার সরাসরি পার্টির কাছ থেকেও নেয়। এরপর সে টাকা কি হয় তা জানি না। জানা গেছে, ব্যবসায়ীরা গুদাম থেকে চাল নির্বিঘ্নে এদিক সেদিক নিতে স্থানীয় থানা পুলিশকেও টন পিছু একটি অঙ্কের টাকা দেন। যদি এক হাজার টাকা করেও ধরা হয় তাহলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯ উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার পকেটে সরাসরি গেছে ১২ লক্ষাধিক টাকা। ১২ হাজার ২০ টন চাল-গম এর বিপরীতে এই টাকা তাদের পকেটে গেছে। চাল-গম কেনার ব্যবসায়ীরা স্থানীয় সংসদ সদস্য বা সরকার দলীয় প্রভাবশালী নেতাদের মনোনীত হয়ে থাকেন। তাদের কাছ থেকে থোক একটি অংশ চলে যায় ওইসব জন প্রতিনিধির পকেটে। প্রকল্প কর্মকর্তার পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের ভাগ পাওয়ার বিষয়টিও ওপেনসিক্রেট। বরাদ্দ বিতরণের সময় প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা থাকেন ইউএনও’দের কাছে কাছে। তাদের সব হিসাব-নিকাশ বোঝাতে হয় ইউএনও’র কাছে। কসবার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সৈয়দ আরিফুলের বক্তব্যেও এমনটা স্পষ্ট। জানান, ইউএনও’র হুকুম ছাড়া প্রকল্পের তালিকাও দিতে পারবেন না তিনি।
তালিকা নিষেধ: প্রকল্পের তালিকা দেখানো নিষেধ। তালিকা চাইলেই শুরু হয় নানা টালবাহানা। কসবার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কাছে তার এলাকার তালিকা চাইতেই বলেন, এটা ইউএনও সাহেবের কাছে আছে। তার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। আবার বলেন, মৌখিকভাবে চাইলেই তো হবে না। লিখিত আবেদন করেন। স্থানীয় সাংবাদিকরা জানান, তালিকা নিষেধ। নবীনগরের তালিকার জন্য একমাস মাস ধরে ঘুরে হয়রান হচ্ছেন স্থানীয় এক সাংবাদিক। তাকে পিআইও বলেছেন, তালিকা দিতে ইউএনও’র অনুমতি লাগবে। তালিকা না দেয়ার রহস্যের কথাও জানিয়েছেন সেখানকার এক সাংবাদিক। বলেন, টিআরের প্রকল্প দিয়ে ইউএনও’র বাসায় হাই কমোড বসানো হয়েছে। থানার টোল চেয়ার কেনা হয়েছে। এমন গোপন আরও অনেক প্রকল্পই থাকে তাদের। তাই তালিকা নিয়ে কঠোর এই গোপনীয়তা তাদের। 

Courtesy: http://www.mzamin.com/details.php?nid=MTI5MzQ=&ty=MA==&s=MTg=&c=MQ==

Crime Using Anti Corruption Commission

‘অভিযোগ ধামাচাপা দিতেই ঘুষ’ 

অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পেতে টাকা দিয়েছেন এলজিইডি’র প্রধান প্রকৌশলী, সওজের নির্বাহী প্রকৌশলী, বিআইডব্লিউটিএ’র নির্বাহী প্রকৌশলী, পুলিশের এসপি, দারোগা ও ওসি। দুদকে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্ত হচ্ছে-এ কথা জানিয়ে ফোন করার পর পরই দুর্নীতিবাজরা যে কোনভাবে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টা করতেন। এ জন্য তারা নিজেরাই দফায় দফায় ফোন করে মোটা অঙ্কের টাকার অফার দিতেন। আপসরফা হলে দুর্র্র্নীতি দমন কমিশনের চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের নামে খোলা ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের একাউন্টে টাকা জমা পড়তো। এভাবে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় গ্রেপ্তারকৃত প্রতারক চক্রের সদস্য জিয়াউর রহমান ও ইস্রাফিল। তিন দিনের রিমান্ডে পুলিশের কাছে এসব তথ্য দিয়েছে তারা। চক্রের ২ সদস্যকে গত  বৃহস্পতিবার গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। পরে তাদের কদমতলী থানায় সোপর্দ করা হয়। প্রতারক চক্রের সদস্য জিয়াউর রহমান অষ্টম শ্রেণী পাস হয়েও নিজেকে দুদকের সহকারী পরিচালক সাহাবউদ্দীন বলে পরিচয় দিতো। ২০১০ সাল থেকে তারা এ প্রতারণা চালিয়ে আসছিল। পুলিশ প্রতারকদের জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পেরেছে তাদের সঙ্গে দুর্নীতি দমন কমিশনের কয়েকজন কর্মচারী জড়িত। তারাই মূলত তদন্তাধীন অভিযোগের তথ্য প্রতারকদের কাছে সরবরাহ করতো। কাজ সম্পূর্ণ হলে তারা পেতো কমিশন। পুলিশ জানিয়েছে, জিজ্ঞাসাবাদে জিয়াউর রহমান দুর্নীতি দমন কমিশনের কয়েকজন অসাধু কর্মচারীর নাম বলেছে যারা তাদের সঙ্গে জড়িত ছিল। তবে যারা দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি পাওয়ার জন্য টাকা দিয়েছে তাদের সবার নাম ও পদবি বলতে পারেনি তারা। দুর্নীতির অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার কথা বলে অর্থ আদায়ের জন্য ২০১১ সালে দুদকের চেয়ারম্যান গোলাম রহমানের নামে একাউন্ট খোলে তারা। ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের বিজয়নগর শাখায় হিসাবটি খোলা হয়। তবে টাকা জমা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা টাকা তুলে নিতো। ফলে ওই হিসাবে এখন স্থিতির পরিমাণ ৩ হাজার টাকার মতো বলে জানিয়েছে ব্যাংকের একটি সূত্র। হিসাবটি ফ্রিজ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে প্রতারকরা জানিয়েছে, ব্যাংক হিসাব খোলার আগে তারা হাতে হাতে ও কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতো। দুর্নীতি দমন কমিশনের কার্যালয়ের প্রধান ফটক থেকেও তারা অনেকের কাছে টাকা নিয়েছে। কিন্তু এটি অনিরাপদ এবং সম্পূর্ণ বিশ্বাসযোগ্য না হওয়ায় তারা দুদক চেয়ারম্যানের নামে ব্যাংক হিসাব খোলে তারা। গোলাম রহমানের নামে ব্যাংক হিসাব খুলতে ব্যাংকের কোন কর্মকর্তা সহায়তা করেছে কিনা তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। জিজ্ঞাসাবাদে তারা জানিয়েছে, গত কয়েক মাসে তারা টাকা নিয়েছে-বিআইডব্লিউটিসি নারায়ণগঞ্জের নির্বাহী প্রকৌশলী, সড়ক ও জনপথ বিভাগের মাদারীপুরের নির্বাহী প্রকৌশলী, নারায়ণগঞ্জ শিল্পকলা একাডেমীর পরিচালক, চট্টগ্রামের ১টি থানার ওসি, ২ জন এসআই, বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের ২ সহকারী পরিচালক, একজন প্রকল্প পরিচালক, বিআরটিএ’র একজন ইন্সপেক্টর, ২ জন সহকারী পরিচালক ও ঢাকা মেডিকেলের একজন চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নেতার কাছ থেকে। ব্যাংকে টাকা জমার হওয়ার পর পরই তারা এটিএম কার্ড দিয়ে টাকা তুলে নিত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কদমতলী থানার এসআই আল মামুন বলেন, এ প্রতারক চক্রের সদস্য ছিল ৩ জন। জিয়াউর ও ইস্রাফিল ছাড়া তাদের আরেক সদস্য ওমর কাজী মোটা অঙ্কের টাকা নিয়ে ২-৩ মাস আগে ইতালি পালিয়ে গেছে। এ চক্রের নেতা জিয়াউর রহমান। আদায়কৃত টাকা দিয়ে সমপ্রতি একটি গার্মেন্ট ফ্যাক্টরি গড়েছে। গ্রেপ্তারকৃত জিয়াউর রহমান বলেছে, গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে অভিযোগ থাকা ব্যক্তিদের শনাক্ত করতো তারা। এরপর টেলিফোন গাইড থেকে নম্বর নিয়ে ওই ব্যক্তিদের ফোন করা হতো। গ্রেপ্তারকৃত ইসরাফিল জানিয়েছে, সে মালিবাগে একটি কাঁচের দোকানে কাজ করতো। ২০১০ সালে জিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের কিছুদিন পর জিয়া তাকে এসএ পরিবহনের কাকরাইল শাখায় ২০ হাজার টাকা তুলে আনতে পাঠায়। টাকা আনলে জিয়া তাকে এক হাজার টাকা বকশিশ দেয়। কিছুদিন পর আবার এসএ পরিবহন থেকে আরও ২০ হাজার টাকা এনে দেয় সে। এবার জিয়া তাকে তিন হাজার টাকা দেয়। একদিন ইস্রাফিলকে একটি ব্যাংক হিসাব খুলে দিতে বলে জিয়া। কামরুল হক নামের ডাচ্‌-বাংলা ব্যাংকের এক কর্মকর্তার রেফারেন্স দিয়ে গোলাম রহমানের নামে একাউন্ট খুলে দেয় ইস্রাফিল। একাউন্ট খোলার ১০ দিন পর ইস্রাফিল ব্যাংকের এটিএম কার্ড ও চেক বইয়ের সব পাতায় স্বাক্ষর করে জিয়াকে দিয়ে দেয়। পুলিশ জানিয়েছে, প্রতারক চক্রের সদস্য জিয়াউর রহমান ওরফে জিয়ার পিতার নাম মৃত এছাহাক তালুকদার। তার গ্রামের বাড়ি মাদারীপুর জেলার শিরকাটা তালুকদার বাড়ি। সে কদমতলী এলাকার ১১১, জুরাইন মেডিকেল রোডের জনৈক রব মোল্লার বাড়িতে ভাড়া থাকতো। চক্রের অপর সদস্য ইস্রাফিলের পিতার নাম বজলুর রহমান। তার গ্রামের বাড়ি বরিশালের মেহেন্দীগঞ্জ থানার ভাষানচর খানবাড়িতে। রাজধানীর মালিবাগ  চৌধুরীপাড়ার ২৫/১/এ নম্বর বাড়িতে ভাড়া থাকতো।  দুদকের পরিচালক (অবলোকন ও মূল্যায়ন) মেজর আশিস সরকার জানিয়েছেন, দুর্নীতির অনুসন্ধানের কোন পর্যায়ে কাউকে অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দেয়ার সুযোগ নেই। অনুসন্ধানকারী কর্মকর্তা ইচ্ছা করলেও তা করতে পারবেন না। কারণ একটি বিশেষ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দুর্নীতির তদন্ত বা অনুসন্ধান চলে। দুদকের বিশেষ অনুসন্ধান বিভাগের কর্মকর্তা স্কোয়াড্রন লিডার তাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, যদি কেউ দুদকের নাম ভাঙিয়ে অর্থ দাবি করে বা অভিযোগ থেকে অব্যাহতির প্রস্তাব দেয় তবে সঙ্গে সঙ্গে তা দুদককে জানানো উচিত। তাহলে দুদক দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে। র‌্যাব ১০-এর অধিনায়ক আমীর মজিদ জানিয়েছেন, এ ধরনের আরও কোন প্রতারক চক্র সক্রিয় আছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ বিষয়ে কারও কাছে তথ্য থাকলে র‌্যাবকে জানানোর অনুরোধ জানিয়েছেন তিনি।

Courtesy: http://www.mzamin.com/details.php?nid=MTI5MjU=&ty=MA==&s=Mjc=&c=MQ==

July 4, 2012

Threatened to thrown away from 7th floor by the deputy director, for not paying BRIBE

ঘুষ না দেয়ায় প্রকৌশল অধিদপ্তরের ৮ তলা থেকে ফেলে দেয়ার হুমকি

৪ লাখ টাকা ঘুষ না দেয়ায় শিক্ষা ও প্রকৌশল অধিদপ্তরের এক কর্মচারীকে ৮ তলা থেকে ফেলে দেয়ার হুমকি দেয়া হয়েছে। শুধু তা-ই নয়, টাকা না দেয়ায় ওই কর্মচারীর কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেয়া হয়েছে জোর করে। নিয়োগ কমিটির সদস্য সচিব ও অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক (প্রশাসন) বিজয় কুমার ঘোষ নিজেই এ কাজ করেছেন বলে অভিযোগ করেছেন নির্যাতিত কর্মচারী ফুয়াদ হোসেন কাদেরী। বিষয়টি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও শিক্ষা সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন তিনি। ১২ই জুন অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলীর কক্ষে নির্যাতন করে তার কাছ থেকে পদত্যাগপত্র নেন বিজয় কুমার ঘোষ। এ সময় প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহিল আজাদ ও নিয়োগ কমিটির প্রধান এবং অধিদপ্তরের পরিচালক (অর্থ ও হিসাব) আবদুল লতিফও উপস্থিত ছিলেন। পদত্যাগপত্রে ফুয়াদকে লিখতে বলা হয় আমি শারীরিকভাবে অক্ষম তাই চাকরি থেকে অব্যাহতি চাচ্ছি। অথচ সচিবালয় ক্লিনিক থেকে স্বাস্থ্যগত সনদ নিয়ে ২২শে জুন গার্ড হিসেবে চাকরিতে যোগ দেন ফুয়াদ। এর আগে অবশ্য তিনি অধিদপ্তরে মাস্টাররোলে দীর্ঘ ৮ বছর কাজ করেছেন। গার্ড পদে ১০ জন, গাড়িচালক পদে ২ জন, এলএলএসএস পদে ৯ জন ও চৌকিদার পদে ৯ জনের নিয়োগের বিষয়ে ২০১১ সালের ২৪শে মার্চ বিজ্ঞপ্তি দেয়া হয়। ওই নিয়োগ কমিটির প্রধান ছিলেন অধিদপ্তরের পরিচালক আবদুল লতিফ (অর্থ ও হিসাব), সদস্য সচিব ছিলেন প্রকৌশল শাখার উপ-পরিচালক (প্রশাসন) বিজয় কুমার ঘোষ। চাকরিতে আবেদন করার পর থেকে চাকরি দেয়ার নামে বিজয় কুমার ঘোষ টাকা দাবি করে আসছিলেন ফুয়াদের কাছে। ১৭ই মে ফুয়াদ শিক্ষাসচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরীর গাড়ির রেজিস্ট্রেশনের টাকা জমা দিতে মিরপুরের বিআরটিএ-তে যাচ্ছিলেন। দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রোকেয়া সরণি পর্যন্ত যেতেই বিজয় কুমার ঘোষ ফোন করেন তাকে। ফোনে তাকে দ্রুত শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে যেতে বলেন। ফুয়াদ মোটরসাইকেলযোগে প্রকৌশল অধিদপ্তরের কার্যালয় থেকে স্টিকারযুক্ত একটি গাড়ি নিয়ে মন্ত্রণালয়ে যান। ফুয়াদ শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কক্ষের সামনে গিয়ে দাঁড়ান। বিজয় এ সময় শিক্ষামন্ত্রীর রুম থেকে বেরিয়ে ইশারা করে তাকে ১৭ তলায় নামতে বলেন। ১৭ তলায় গিয়ে ফুয়াদকে তিনি বলেন, তোর চাকরি হতে হলে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকা লাগবে। আজই দিতে হবে ২ লাখ টাকা, পরে আরও দিতে হবে ২ লাখ টাকা। টাকা দিতে অস্বীকার করলে বিজয় রেগে গিয়ে তাকে বলেন, তোর চাকরি কিভাবে হয় দেখে নেবো। এরপর চলে যান ফুয়াদ। ২০শে মে ফুয়াদ কাজ করছিলেন প্রকৌশল অধিদপ্তরের নিচ তলায়। সন্ধ্যায় বিজয় অফিস থেকে নিচে নামেন। ওইদিনই নিয়োগ পরীক্ষার ফাইনাল বৈঠক ছিল। তার সঙ্গে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মুজিবুর রহমানও ছিলেন। মুজিবুর রহমান চলে গেলে বিজয় তার গাড়ি রেডি করে দিতে বলেন ফুয়াদকে। এ সময় তিনি বলেন, টাকা তো দিলি না তোকে সাভারে বদলি করে দিয়েছি। দ্রুত টাকার ব্যবস্থা না করলে তোর চাকরিটাও থাকবে না। ২২শে মে ফুয়াদ চাকরিতে যোগ দেন। চাকরি করাকালে বিজয় প্রায় দিনই তার কাছে টাকার তাগাদা দিতেন। ১২ই জুন প্রধান প্রকৌশলীর পিএ যান্ত্রিক শাখায় ফোন করে ফুয়াদকে প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যেতে বলেন। কিছুক্ষণ পর বিজয়ও ফোন করে ফুয়াদকে প্রধান প্রকৌশল শাখায় যেতে বলেন। সাড়ে ১১টার দিকে ফুয়াদ প্রধান প্রকৌশলীর কার্যালয়ে যান। গিয়ে দেখেন সেখানে প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহিল আজাদ, পরিচালক আবদুল লতিফ বসা। বিজয় এ সময় ফুয়াদকে প্রশ্ন করেন, তুমি কয়টা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছো? সত্য কথা বলো। তা না হলে এখনই র‌্যাব ডেকে রিমান্ডে দেবো। দুটি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার কথা স্বীকার না করলে আটতলা থেকে ফেলো দেবো। এ সময় ফুয়াদের শার্টের পেছনে ধরে একটি কাগজে স্বাক্ষর করতে বলেন বিজয় কুমার ঘোষ। ১২ই জুন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ ও শিক্ষা সচিব ড. কামাল আবদুল নাসের চৌধুরী লেখা বরাবর লেখা এক  প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহিল আজাদ ও পরিচালক আবদুল-আবেদনে ফুয়াদ লিখেছেন লতিফের উপস্থিতিতে উপ-পরিচালক বিজয় কুমার ঘোষ আমাকে শারীরিকভাবে অক্ষম বলে সাদা কাগজে আবেদন করে স্বাক্ষর করতে বলেন। আমি প্রস্তাব অস্বীকার করলে আইনে সোপর্দ করবে বলে বলা হয়। এমনকি আমাকে হুমকি দিয়ে একটি সাদা কাগজে স্বাক্ষর করতে চাপ দেয়া হয়। আমি আমার অপরাধ জানতে চাইলে ডিডি তড়িঘড়ি করে কোন উত্তর না দিয়ে আমাকে আবেদন লেখা শুরু করতে বলেন। ফুয়াদ শিক্ষামন্ত্রীর বরাবর লেখা আবেদনে আরও লিখেছেন, আমি হতাশ হয়ে তাদের মুখের দিতে তাকিয়ে থেকে আবেদন  আমি শারীরিকভাবে অক্ষম বিধায় নিয়োগ-লিখতে শুরু করি। আবেদনে লিখতে বলা হয় থেকে অব্যাহতি চাই। অথচ আমি সচিবালয় ক্লিনিক থেকে সনদ নিয়ে ২২শে মে কাজে যোগদান করি। আবেদনে স্বাক্ষরের পর আমাকে ডিডি প্রশাসনের অফিস কক্ষে ডেকে নিয়ে ১৫ দিনের জন্য বাড়ি চলে যাওয়ার জন্য বলেন এবং এই সময়ের মধ্যে শিক্ষা ভবনে না আসার জন্য হুমকি দেন। ফুয়াদ ওই ঘটনার পর শিক্ষা সচিবের কাছে বিস্তারিত ঘটনা বলেন। শিক্ষা সচিব সঙ্গে সঙ্গে প্রধান প্রকৌশলীকে ফোন করে জানতে চান ফুয়াদের কাছ থেকে জোর করে স্বাক্ষর নেয়া হয়েছে কিনা। উত্তরে প্রধান প্রকৌশলী বিষয়টি স্বীকার করেন। শিক্ষা সচিব এ সময় প্রধান প্রকৌশলীকে বলেন, ফুয়াদের বিরুদ্ধে যাতে কোন ব্যবস্থা নেয়া না হয়। বিষয়টি মন্ত্রণালয় দেখবে। ১৩ই জুন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও কর্মচারী পরিষদের সভাপতি হায়দার আলী মোল্লা, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেনসহ কয়েকজনকে নিয়ে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের কাছে গিয়ে বিস্তারিত ঘটনা খুলে বলেন ও লিখিত অভিযোগ করেন। মন্ত্রী ঘটনা শুনে দুঃখপ্রকাশ করেন। মন্ত্রী নিজেই অভিযোগটি প্রধান প্রকৌশলী বরাবর মার্ক করেন। বিষয়টি তদন্তে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল হোসেন চৌধুরীকে প্রধান করে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য নিয়েছে। এ বিষয়ে হায়দার আলী মোল্লা মানবজমিনকে বলেন, ছেলেটি মন্ত্রণালয়ের নিচে দাঁড়িয়ে কাঁদছিলো। আমরা তাকে সচিব মহোদয়ের কাছে নিয়ে যাই। সচিব প্রধান প্রকৌশলীকে ফোন করে বিষয়টি জানতে চান। তিনি বলেন, কোন সভ্য সমাজে এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে না।
সংশ্লিষ্টদের বক্তব্য: অভিযোগের বিষয়ে বিজয় কুমার ঘোষ বলেন, আমি তার কাছ থেকে কখনও টাকা চাইনি। ফোনে তাকে মন্ত্রণালয়ে যেতে বলেছিলেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন সময় অনেককে ফোন করি, তাকেও হয়তো ফোন করেছিলাম। তার কাছ থেকে জোরপূর্বক পদত্যাগপত্র নিলেন কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি জোর করে পদত্যাগপত্র নিইনি। সে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করেছে। পদত্যাগপত্রে তাকে শারীরিকভাবে অক্ষম বলে আপনি জোর করে স্বাক্ষর নিয়েছেন এ বিষয়ে আপনার বক্তব্য কি জানতে চাইলে তিনি বলেন, সে নিজেই শারীরিকভাবে অক্ষম বলে স্বীকার করেছে। কয়েকদিনের ব্যবধানে সে কিভাবে অক্ষম হয়ে গেল জানতে চাইলে বিজয় কুমার ঘোষ বলেন, এটা আমি কি করে বলবো? প্রধান প্রকৌশলী আবদুল্লাহিল আজাদ বলেন, ওই পদত্যাগপত্র এখনও গ্রহণ করা হয়নি। আপনার কক্ষে একজন কর্মচারীর কাছ থেকে জোর করে কিভাবে পদত্যাগ নেয়া হলো জানতে চাইলে তিনি বলেন, এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি। এ বিষয়ে ফুয়াদ হোসেন কাদেরী বলেন, আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই।

courtesy: http://www.mzamin.com/details.php?nid=MTE5OTc=&ty=MA==&s=Mjc=&c=MQ==

No Entry for Journalists at the COAL Plant!!

বড়পুকুরিয়ায়... সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ !

বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে দেশের একমাত্র কয়লা ভিত্তিক দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র। অনিয়ম আর দুর্নীতি বাসা বেঁধেছে ২৫০ মেগাওয়াটের বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। সেই সঙ্গে শ্রমিক কর্মচারীদের লাগাতার আন্দোলনে অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে এর ভবিষ্যৎ। যান্ত্রিক ক্রুটির কারণে প্রায় বন্ধ থাকছে বিদ্যুৎ উৎপাদন কার্যক্রম। এমন পরিস্থিতিতে আগামীকাল থেকে বৃহত্তর আন্দোলনে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে আন্দোলনরত শ্রমিকরা। সর্বসাধারণ অবাধে যাতায়াত করলেও তাদের এই আন্দোলন আড়াল করতে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ভেতরে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে কর্র্তৃপক্ষ। এমন অভিযোগ আন্দোলনরত শ্রমিকদের। দিনাজপুরের পার্বতীপুরে বড়পুকুরিয়া ২৫০ মেগাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রেটির কার্যক্রম শুরু হয় ২০০২ সালে। আনুষ্ঠানিকভাবে ২০০৬ সালে জুন মাসে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু করে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ  সংযোগ হয় এ কেন্দ্রটি। প্রতিষ্ঠানে মালামাল ক্রয়ের জন্য লোক দেখিয়ে দরপত্র আহবান করা হলেও নিজেদের পছন্দ মতো ঠিকাদার নিয়োগ করে মোটা অংকের উৎকোচ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। এ কারণে নিন্মমানের মালমাল সরবরাহ করায় প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বিদ্যুৎ প্লান্ট। অন্যদিকে কেন্দ্রে অকেজো মালামাল বিক্রির ক্ষেত্রেও ঘটছে একই ঘটনা। এছাড়াও মালমাল চুরির ঘটনাতো আছেই। দেশের একমাত্র কয়লা ভিত্তিক এ তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে উৎপাদিত বিদ্যুৎ উত্তরাঞ্চলে সেচ সুবিধাসহ বিভিন্ন সুফল বয়ে আনলেও এখন তা বিপর্য়য়ের মুখোমুখি। দুর্নীতি আর অনিয়মের রাহুগ্রাসে নিমজ্জিত এ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে কর্মরত ক্যাজুয়েল শ্রমিক-কর্মচারীরা ৬ দিন ধরে অব্যাহত রেখেছে কর্মবিরতি। গতকাল বুধবার তারা ৮ ঘন্টা কর্ম বিরতি পালন সহ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে। ঠিকাদারি প্রথা বাতিল করে ২৪৩ জন শ্রমিক-কর্মচারী স্থায়ী নিয়োগের দাবীতে করছে এ আন্দোলন। সংবাদ সম্মেলন, মানববন্ধন, অবস্থান ধর্মঘট, কর্মবিরতি ও বিক্ষোভ মিছিল সমাবেশ করে আসছে তারা। দীর্ঘ দিন ধরে তারা আন্দোলন চালিয়ে আসছে। গত কয়েক দিন ধরে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দের শ্রমিক আন্দোলনের সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বিমুখ হয়ে ফিরে এসেছেন সাংবাদিকরা। কোন সাংবাদিককে প্রবেশ করতে দেয়নি কেন্দ্রে। অথচ সর্ব সাধারণ নির্বিঘেœ প্রবেশ করছে কেন্দ্রের অভ্যন্তরে। এ ব্যাপারে তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের প্রধান প্রকৌশলী মঞ্জুরুল হকের সথে মুঠোফোনে কথা বলা হলে তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন বলে জানান। তিনি বলেন, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের চেয়ারম্যানের অনুমতি ছাড়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রে সাংবাদিক প্রবেশ নিষিদ্ধ। আগে তার অনুমতি নিয়ে আসেন তার পর প্রবেশ করেন কেন্দ্রে। বড়পুকুরিয়া তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্রের ক্যাজুয়েল শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়ন ্এর সভাপতি নুরুজ্জামানের অভিযোগ, এক সাথে পরীক্ষা দেয়া সহকারী প্রকৌশলী, উপ-সহকারী প্রকৌশলী ও মাষ্টাররা স্থায়ী নিয়োগ পেলেও দীর্ঘ ১১ মাস ধরে তাদের স্থায়ী নিয়োগ প্রদানে টালবাহানা করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। তাদের দাবী মানা না হলে তারা কঠোর আন্দোলনে যাবেন বলে জানিয়েছেন। এমন কি রেল ও সড়ক পথ অবরোধ করে কেন্দ্রটি বন্ধ করে দিতেও তারা বাধ্য হবেন।

courtesy: http://www.mzamin.com/details.php?nid=MTIwMjQ=&ty=MA==&s=MzY=&c=MQ==