March 27, 2012

When The Guardian becomes the Persecutor - রক্ষক ই যখন ভক্ষক

সুমন পাইক
বার্তা২৪ ডটনেট
ঢাকা, ২৬ মার্চ: সন্ত্রাসী ধরার নামে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের থানায় থানায় চলছে সিভিল টিমের আটক-মুক্তি বাণিজ্য। রোববার দুপুর ১২টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত শাহবাগ থানার সিভিল টিমের একটি সাদা মাইক্রোবাস (ঢাকা মেট্রো চ ১১-৪৪৭৩) অনুসরণ করে পাওয়া গেছে আটক বাণিজ্যের ভয়াবহ চিত্র।
 
এ সময়ের মধ্যে টিমটি ছয় থানা এলাকার সড়ক থেকে ১২ জন লোককে আটক করে। পথে পথে টাকার বিনিময়ে মুক্তি মিলে ১০ জনের। একজনের মুক্তি মিলে খোদ থানায়। আরেকজন বিকাল পর্যন্ত থানায় আটক ছিলেন। তবে ডিউটি অফিসারের কাছে তা নথিভুক্ত ছিল না।
 
এর আগে ১০ মার্চ আটক ও টাকায় মুক্তির অভিযোগে রামপুরা থানার এস আই আবু হানিফ, এসআই শহিদুল, এএসআই সাইফুল ও এএসঅই মনিরকে ডিএমপির মতিঝিল জোনের ডিসির দফতরে তলব করা হয়। পরে আর আটক বাণিজ্য করবেন না বলে ডিসি আনোয়ার হোসেনের কাছে মুচলেকা দিয়ে আসেন এই পুলিশ কর্মকর্তারা। অনুসন্ধানে দেখা গেছে, এসি বা ডিসিদের চোখ ফাঁকি দিয়ে ওসিদের সহযোগিতায় এসআই ও এএসঅইরা এ বাণিজ্য করে থাকে।
 
রোববার দুপুর ১২ টার দিকে শাহবাগ থানার এসআই ছাইদুলের নেতৃত্বে একজন এএসআই, একজন কনস্টেবল ও সন্ত্রাসী আঙ্গুল কাটা সবুজসহ সিভিল টিমের মাইক্রোবাসটি বাড্ডা থানাধীন মেরুল মাছের আড়তের সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়। এ সময় মাছের আড়ৎ টাকা গুণতে গুণতে বের হয়ে মাটির ঠিকাদার হারুনুর রশিদ রামপুরা টিভি সেন্টারের বিপরীত দিকের মিষ্টি ভাণ্ডার নামের দোকানের সামনে দাঁড়ান। সেখানে দাঁড়িয়ে সড়ক পার হওয়ার চেষ্টা করছিলেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মচারী সোহাগ। এ সময় সিভিল টিমের গাড়িটি এসেই তাদের উঠিয়ে নিয়ে চলে যায়।
 
হারুন জানান, তিনি ডায়েবেটিক রোগী। তিনি পদ্মা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে ডা. কানিজ মাওলার অধীনে চিকিৎসা নিচ্ছিলেন। টাকা নিয়ে তিনি ওই চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার জন্য সেখানে দাঁড়ান। এরপর তাকে ও সোহাগকে তুলে নিয়ে গাড়িটি খিলগাঁও থানা এলাকা হয়ে শাহজাহানপুরের দিকে যায়। গাড়িতে স্বজনদের ফোন করতে বলেন এসআই ছাইদুল। সোহাগ ফোন করলে তার স্বজন শাহীনের কাছে ১০ হাজার টাকা দাবি করে এসআই। এ সময় আটককৃত হারুনের স্বজনদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে শাহবাগ থানায় ফোন করলে ডিউটি অফিসার এসআই মালেক জানান, ছাইদুলের শাহবাগ থানা এলাকায় ডিউটি, রামপুরা টিভি সেন্টার যাওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। এরপর এসআই ছাইদুলের মোবাইলে ফোন করলে তিনি আটকের বিষয় অস্বীকার করেন। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, তিনি রাজধানীর যে কোনো এলাকা থেকে আসামি ধরতে পারবেন। তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তাকে এ নির্দেশ দিয়েছেন।
 
আটক হওয়া হারুন জানান, সাংবাদিকদের কাছ থেকে টেলিফোন পেয়ে এসআই তাকে চালান দেয়ার হুমকি দিতে থাকে। এ অবস্থায় গাড়িটি মাহজাহানপুরে পৌঁছলে আটক করা হয় একজনকে। তার কাছ থেকে এক হাজার টাকা নিয়ে ফকিরাপুল এলাকায় ছেড়ে দেয়া হয়। গাড়ি চলতে থাকে পল্টনের দিকে। আটক দু’জনকে টাকার বিনিময়ে বংশালে মুক্তি মেলে। এরপর বংশাল থেকে তিনজনকে আটক করা হয়। এদের দুজনের মুক্তি মিলে বংশালেই আরেকজনের মুক্তি মিলে দোয়েল চত্বর মোড়ে। এরপর টিএসসির মোড়ে মাত্র পাঁচশত টাকার বিনিময়ে ছাড়া পায় সোহাগ। গাড়িটি চলে যায় ঢাকা মেডিকেলের দিকে। সেখানে সড়ক থেকে একজনকে আটক করা হয়। পরে গাড়িটি চলে যায় শাহবাগ থানায়। এর মধ্যেই সেখানে পৌঁছে যায় হারুনের স্বজনরা। পরে দুই হাজার টাকার বিনিময়ে মুক্তি পায় হারুন। তার বাসা রামপুরা মহানগর প্রজেক্টে। তখনো হারুন ঢাকা মেডিকেল এলাকা থেকে আটককৃতকে থানায় দেখে এসেছেন।
 
হারুনের মুক্তির পর এসআই ছাইদুলের কাছে জানতে চাইলে তিনি জানান, হারুন সন্ত্রাসী। তবে কেন তাকে ছাড়া হলো-এ প্রশ্নের জবাব এড়িয়ে তিনি গোপালগঞ্জের প্রভাব দেখান এবং তার কিছুই করা যাবে না বলে জানান।
 
এরপর তিনি নিজেই বিকাল সাড়ে চারটার দিকে ফোন করে এ প্রতিবেদককে থানায় দেখা করার জন্য বলেন।
 
Courtesy: বার্তা২৪ ডটনেট/এসকে/জবা - http://www.barta24.net/index.php?view=details&data=Food&news_type_id=1&menu_id=64&news_id=37181

0 comments:

Post a Comment