পুলিশের দৈনন্দিন কাজের একটি হচ্ছে মাদক নির্মূল করা। সেই পুলিশ সদস্যরাই যদি মাদক ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েন তা হলে বলার আর কিছুই থাকে না। এমন ঘটনা ঘটেছে রাজশাহীতে। সেখানে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের তিন সদস্য ও অটোরিকশা চালককে ৯৫৪ বোতল ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আলমগীর কবিরের নেতৃত্বে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও র্যাবের যৌথ টাস্কফোর্স অভিযান চালিয়ে নগরীর গুড়িপাড়া থেকে তাদের গ্রেফতার করে।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন_ কনস্টেবল সিদ্দিকুল ইসলাম (১৪৪৩), লালন মাহমুদ (১২৩৫) ও আবদুস সামাদ (১১৮৩)
এবং অটোরিকশা চালক সাইফুল ইসলাম। গ্রেফতারের পর তিন পুলিশ সদস্যকে ছাড়াতে ভোর পর্যন্ত তদবির করেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামান ও পরিদর্শক তোফাজ্জেল খান।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন_ কনস্টেবল সিদ্দিকুল ইসলাম (১৪৪৩), লালন মাহমুদ (১২৩৫) ও আবদুস সামাদ (১১৮৩)
এবং অটোরিকশা চালক সাইফুল ইসলাম। গ্রেফতারের পর তিন পুলিশ সদস্যকে ছাড়াতে ভোর পর্যন্ত তদবির করেন নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামান ও পরিদর্শক তোফাজ্জেল খান।
যেভাবে গ্রেফতার : রাজশাহী মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর 'এ' সার্কেলের পরিদর্শক ভূপতি কুমার বর্মণ জানান, গোপন সূত্রে খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার রাতে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে টাস্কফোর্স সদস্যরা নগরীর গুড়িপাড়া এলাকায় অবস্থান নেন। রাত আড়াইটার দিকে একটি অটোরিকশা সেখানে আসে। ওই অটোরিকশায় তারা তিন যাত্রী দেখতে পান। এ সময় অটোরিকশার ভেতরে বস্তা দেখতে পেয়ে তারা তল্লাশি করেন। তল্লাশি চালিয়ে ওই বস্তাগুলোতে বিপুল পরিমাণ ফেনসিডিল দেখতে পান। পরে র্যাব সদস্যরা অটোরিকশায় থাকা তিন যাত্রী ও চালককে আটক করেন। ফেনসিডিলসহ গ্রেফতারের পর আটক ব্যক্তিরা নিজেদের নগর গোয়েন্দা পুলিশের সদস্য হিসেবে পরিচয় দেন। ভূপতি কুমার আরও জানান, আটক পুলিশ সদস্যরা দাবি করেছেন, তারা নিজেরাই অভিযান চালিয়ে ওই মাদক উদ্ধার করেছেন। অথচ থানার আদেশনামা বা জব্দ তালিকা তারা দেখাতে পারেননি। তখন বাহিনীর নিজস্ব পোশাকেও তারা ছিলেন না। চারঘাট উপজেলার সীমান্তবর্তী টাঙ্গন এলাকা থেকে ওই চালানটি নিয়ে আসা হচ্ছিল।
সকালে নগরীর রাজপাড়া থানায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের তিন কনস্টেবলসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেন ভূপতি কুমার বর্মণ। মামলার আলামত হিসেবে উদ্ধার হওয়া ফেনসিডিলগুলো থানায় জমা দেন তিনি। মামলার পর পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান।
নগর পুলিশের তদবির : ফেনসিডিলসহ নগর গোয়েন্দা পুলিশের তিন সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের ছাড়াতে নগরীর ভেড়িপাড়ার মোড়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কার্যালয়ে ছুটে যান নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামান ও পরিদর্শক তোফাজ্জেল খান। এ সময় সেখানে বসে একটি ফাঁকা সিসিতে (কমান্ড সার্টিফিকেট) গ্রেফতারকৃতদের নাম লিখে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযানের দায়িত্বে ছিল বলে চালানোর চেষ্টা করেন তোফাজ্জেল খান। তবে সিসিতে লেখা শুরু করার সময় তা কেড়ে নেন ভূপতি কুমার বর্মণ। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র্যাবের উপস্থিতিতে নগর পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তার সঙ্গে ভূপতি কুমার বর্মণের বাকবিত া হয়। এক পর্যায়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিদর্শক তোফাজ্জেল খানকে সেখান থেকে বের করে দেন। ভোর পর্যন্ত তদবির করে ছাড়াতে না পেরে তারা চলে যান। এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামান কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্র জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে তারা জানতে পেরেছেন দীর্ঘদিন পুলিশের ওই তিন সদস্য ফেনসিডিলের ব্যবসা করে আসছিলেন। নগরীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা ফেনসিডিল সরবরাহ করে থাকেন।
এদিকে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হওয়ার পর নগর পুলিশের তিন সদস্যকে গতকাল চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নগর পুলিশের কমিশনার এম. ওবাইদুল্লাহ এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যারা অপরাধ করবে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আলমগীর কবির বলেন, ওই পুলিশ সদস্যরা মাদক চোরাচালান করছে_ এমন তথ্য পেয়েই অভিযান চালানো হয়। এ ব্যাপারে রাজপাড়া থানায় মাদক আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। ওই চার জনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডিআইজি অফিসের এএসআইয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে
এদিকে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশীদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ তদন্ত করছে পুলিশের সিকিউরিটি সেল। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মাদক ব্যবসায়ীদের সহায়তার অভিযোগে তাকে ঈশ্বরদী থানা থেকে রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি সিদ্দিকুর রহমান তার বিরুদ্ধে তদন্তের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আরও যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির তত্ত্বাবধানে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানে গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করায় ৫ পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি তাদের ক্লোজ করা হয়। মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত পুলিশ সদস্যরা ছিলেন তৎকালীন পাবনার ঈশ্বরদী থানার ওসি (তদন্ত), নাটোরের লালপুর থানার ওসি, ঠাকুরগাঁওয়ের সদর থানার ওসি (তদন্ত), রংপুর আদালতের ওসি ও নাটোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক আবদুল হান্নান ও ঈশ্বরদী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মামুনুর রশিদ।
রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে তাদের ক্লোজ করার পর বিভাগীয় মামলা করা হয়। এরপর পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে শুনানি শেষে অন্যরা বিভিন্ন জেলায় বদলি পেলেও এএসআই মামুনুর রশিদকে এখনও ডিআইজি অফিসে ক্লোজ করে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার তদন্ত চলার পাশাপাশি মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগটিও তদন্ত করা হচ্ছে।
সকালে নগরীর রাজপাড়া থানায় নগর গোয়েন্দা পুলিশের তিন কনস্টেবলসহ চারজনকে আসামি করে মামলা করেন ভূপতি কুমার বর্মণ। মামলার আলামত হিসেবে উদ্ধার হওয়া ফেনসিডিলগুলো থানায় জমা দেন তিনি। মামলার পর পুলিশ তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান।
নগর পুলিশের তদবির : ফেনসিডিলসহ নগর গোয়েন্দা পুলিশের তিন সদস্য গ্রেফতার হওয়ার পর তাদের ছাড়াতে নগরীর ভেড়িপাড়ার মোড়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর কার্যালয়ে ছুটে যান নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামান ও পরিদর্শক তোফাজ্জেল খান। এ সময় সেখানে বসে একটি ফাঁকা সিসিতে (কমান্ড সার্টিফিকেট) গ্রেফতারকৃতদের নাম লিখে তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে অভিযানের দায়িত্বে ছিল বলে চালানোর চেষ্টা করেন তোফাজ্জেল খান। তবে সিসিতে লেখা শুরু করার সময় তা কেড়ে নেন ভূপতি কুমার বর্মণ। এ সময় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও র্যাবের উপস্থিতিতে নগর পুলিশের ওই দুই কর্মকর্তার সঙ্গে ভূপতি কুমার বর্মণের বাকবিত া হয়। এক পর্যায়ে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা পরিদর্শক তোফাজ্জেল খানকে সেখান থেকে বের করে দেন। ভোর পর্যন্ত তদবির করে ছাড়াতে না পেরে তারা চলে যান। এ নিয়ে কথা বলতে চাইলে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার রোকনুজ্জামান কোনো কথা বলতে রাজি হননি।
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর সূত্র জানায়, প্রাথমিক অনুসন্ধানে তারা জানতে পেরেছেন দীর্ঘদিন পুলিশের ওই তিন সদস্য ফেনসিডিলের ব্যবসা করে আসছিলেন। নগরীসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় তারা ফেনসিডিল সরবরাহ করে থাকেন।
এদিকে ফেনসিডিলসহ গ্রেফতার হওয়ার পর নগর পুলিশের তিন সদস্যকে গতকাল চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। নগর পুলিশের কমিশনার এম. ওবাইদুল্লাহ এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, যারা অপরাধ করবে তাদের শাস্তি হওয়া উচিত।
এ ব্যাপারে ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আলমগীর কবির বলেন, ওই পুলিশ সদস্যরা মাদক চোরাচালান করছে_ এমন তথ্য পেয়েই অভিযান চালানো হয়। এ ব্যাপারে রাজপাড়া থানায় মাদক আইনে একটি মামলা করা হয়েছে। ওই চার জনকে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
ডিআইজি অফিসের এএসআইয়ের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে
এদিকে রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত পুলিশের এক সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মামুনুর রশীদের বিরুদ্ধে মাদক সেবন ও মাদক ব্যবসায় সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগ তদন্ত করছে পুলিশের সিকিউরিটি সেল। গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মাদক ব্যবসায়ীদের সহায়তার অভিযোগে তাকে ঈশ্বরদী থানা থেকে রেঞ্জ ডিআইজি কার্যালয়ে সংযুক্ত করা হয়। রাজশাহী রেঞ্জের ডিআইজি সিদ্দিকুর রহমান তার বিরুদ্ধে তদন্তের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আরও যারা জড়িত তাদের বিরুদ্ধেও তদন্ত হচ্ছে।
পুলিশ সূত্র জানায়, রাজশাহী রেঞ্জ ডিআইজির তত্ত্বাবধানে শুরু হওয়া মাদকবিরোধী অভিযানে গত বছরের ১ ফেব্রুয়ারি মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগিতা করায় ৫ পুলিশ সদস্যকে শনাক্ত করা হয়। ২ ফেব্রুয়ারি তাদের ক্লোজ করা হয়। মাদক ব্যবসায়ীদের সহযোগী হিসেবে চিহ্নিত পুলিশ সদস্যরা ছিলেন তৎকালীন পাবনার ঈশ্বরদী থানার ওসি (তদন্ত), নাটোরের লালপুর থানার ওসি, ঠাকুরগাঁওয়ের সদর থানার ওসি (তদন্ত), রংপুর আদালতের ওসি ও নাটোর জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) উপ-পরিদর্শক আবদুল হান্নান ও ঈশ্বরদী থানার সহকারী উপ-পরিদর্শক মামুনুর রশিদ।
রেঞ্জ ডিআইজি অফিসে তাদের ক্লোজ করার পর বিভাগীয় মামলা করা হয়। এরপর পুলিশের মহাপরিদর্শকের কাছে শুনানি শেষে অন্যরা বিভিন্ন জেলায় বদলি পেলেও এএসআই মামুনুর রশিদকে এখনও ডিআইজি অফিসে ক্লোজ করে রাখা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলার তদন্ত চলার পাশাপাশি মাদক ব্যবসার সঙ্গে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগটিও তদন্ত করা হচ্ছে।
courtesy : http://www.samakal.com.bd/details.php?news=13&action=main&option=single&news_id=240742&pub_no=980

0 comments:
Post a Comment