পদ্মা
সেতু তৈরিতে
পরামর্শক নিয়োগে
দুর্নীতির ঘটনায় চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে
এসেছে।
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী
সৈয়দ আবুল
হোসেন ও
তার ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান সাকো ইন্টারন্যাশনাল কানাডিয়ান প্রতিষ্ঠান
এসএনসি-লাভালিনকে
সেতুর কাজে
পরামর্শক হিসেবে
নিয়োগ দিতে
মোট বরাদ্দের
১০ শতাংশ
ঘুষ দাবি
করেছিল।
বাংলাদেশি টাকায় যার পরিমাণ ৩৮
কোটি।এসএনসি-লাভালিন
কাজ পেলে তারা প্রকল্প থেকে পেত
চার কোটি
৭০ লাখ
ডলার।
দুর্নীতি দমন
কমিশনে প্রেরিত
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে এ তথ্য পাওয়া
যায়।
অর্থের অবৈধ লেনদেনের জন্য গ্রেফতার হওয়া এসএনসি-লাভালিনের সাবেক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা পিয়েরে দুহাইমের কাছ থেকে এ তথ্য পেয়েছে কানাডার পুলিশ। বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে একই তথ্য পেয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
দুর্নীতির এমন সুনির্দিষ্ট তথ্য পেয়ে নতুন করে ফের তদন্ত শুরু করেছে দুদক। সম্প্রতি বিশ্বব্যাংক সরকারের কাছে একটি চিঠি দিয়ে পদ্মা সেতুর দুর্নীতি নিয়ে একটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠন করার আহ্বান জানায়। সরকার নতুন কোনো কমিটি গঠন না করলেও দুদকই নতুন করে তদন্ত শুরু করেছে। এর অংশ হিসেবে ১৪ জুন দুদক সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। গতকাল মঙ্গলবার জিজ্ঞাসাবাদ করেছে জাতীয় সংসদের হুইপ নূর-ই-আলম চৌধুরী লিটনের ভাই নিক্সন চৌধুরীকে।
সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন ও সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভঁূইয়া এবং এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াউল হককে এ অভিযোগে জিজ্ঞাসাবাদ করা হতে পারে বলে জানা গেছে।
গতকাল সকালে ঢাকার সেগুনবাগিচায় দুদকের প্রধান কার্যালয়ে নিক্সন চৌধুরীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন উপ-পরিচালক মীর মোঃ জয়নুল আবেদীন শিবলী ও সহকারী পরিচালক মির্জা জাহিদুল আলম। তাকে সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়।
পরে দুদক চেয়ারম্যান গোলাম রহমান সাংবাদিকদের বলেন, পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগ সম্পর্কে বিশ্বব্যাংক থেকে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে। সেই তথ্যের ভিত্তিতে অভিযোগটি অনুসন্ধান করা হচ্ছে। তিনি বলেন, কানাডা সরকারের নির্দেশে রয়াল কানাডিয়ান মাউন্টেড পুলিশ এ বিষয়ে তদন্ত করেছে। তদন্ত রিপোর্টে উল্লেখ করা অভিযোগ অনুযায়ী কানাডায় বসবাসরত এসএনসি-লাভালিন কর্মকর্তা রমেশ শাহ ও মোঃ ইসমাইলকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। বর্তমানে তারা জামিনে মুক্ত। আগামী মাসের প্রথম দিকে কানাডিয়ান পুলিশের তদন্ত রিপোর্টটি পাওয়া যাবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
জানা গেছে, পদ্মায় মূল সেতু নির্মাণে ঠিকাদার নির্বাচন ও প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগে অনিয়ম, দুর্নীতির দুটি অভিযোগ অনুসন্ধানের কাজ শুরু করে দুদক। এর মধ্যে ঠিকাদার নির্বাচন প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগের বিপরীতে যথাযথ তথ্য-প্রমাণ ও সাক্ষী না পাওয়ায় অভিযোগটি নথিভুক্ত করা হয়েছে। দুটি অভিযোগের মধ্যে পরামর্শক নিয়োগ প্রক্রিয়ায় দুর্নীতির অভিযোগটির অনুসন্ধান চলছে।
সূত্র জানায়, কানাডিয়ান কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনকে পদ্মা সেতু প্রকল্পে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পাইয়ে দিতে সাবেক পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আবুল হাসান চৌধুরী নিয়মবহির্ভূতভাবে সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেন, সেতু বিভাগের সাবেক সচিব মোশাররফ হোসেন ভূ্ইয়াসহ সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে এসএনসি-লাভালিনের বাংলাদেশ প্রতিনিধি জিয়াউল হককে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন। পদ্মা সেতু প্রকল্প কাজের শুরুর দিকে ঢাকায় সেতু বিভাগের অফিসে বৈঠক করে তাদের মধ্যে পরিচয় করানো হয়। ওইভাবে পরিচয় করিয়ে এসএনসি-লাভালিনকে পরামর্শক হিসেবে নিয়োগ পাইয়ে দিতে প্রভাবিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।

0 comments:
Post a Comment